মাসুদ রানা, নিজস্ব প্রতিবেদক: আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের প্রার্থিতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকালে শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
শুনানি শেষে ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, শুনানিতে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন রিয়াজ উদ্দিন। ভিডিও ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্যাদি পর্যালোচনা ও শুনানির পর আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনাটি বিবেচনায় নিয়ে কমিশন সর্বসম্মতভাবে এ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে।
গত সোমবার (২০ মে) নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা থেকে কমিশনের উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ইসিতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে রিয়াজ উদ্দিনকে ব্যাখ্যা দিতে আদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে গত ১৩ মে তৃতীয় ধাপে মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক দেওয়া হয়। ইসির পক্ষ থেকে এদিন প্রার্থীদের সব ধরনের সভা সমাবেশ করতে নিষেধ করা হয়। কিন্তু রিয়াজের বড় ভাই বর্তমান সংসদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজ ও ছোট ভাই সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমানের ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে কমিশনের আদেশ অমান্য করে মঠবাড়িয়া পৌরসভার সামনে বিশাল মিছিল ও সমাবেশ করেন। এতে ওই এলাকায় ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতীক পেয়ে বড় বড় লাঠির মাথায় আনারস বেঁধে মিছিল নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করেন নেতাকর্মীরা। এতে জনসাধারণের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়।
সমাবেশে আশরাফুর রহমান হুমকি দিয়ে বলেন, আঘাত এলে পাল্টা আঘাত করা হবে। নেতাকর্মীদের বাঁশের লাঠি নিয়ে তৈরি থাকতে নির্দেশ দেন। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে বলেন। সর্বশেষ নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেন, আমি আশরাফুর রহমান আপনাদের পাশে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলব। কেউ ঠেকাতে পারবে না।
এরপরই ইসি চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ এনে সহকারী রিটানিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দাখিল করতে বলে।
পর দিন ১৪ মে আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করেন রিয়াজ। সেখানে তিনি জানান, কিছু অতি উৎসাহী কর্মীরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত করেছে, তার জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
রিয়াজ উদ্দিনের দেওয়া জবাব নির্বাচন কমিশনের কাছে সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে ঢাকায় নির্বাচন কমিশনে উপস্থিত হয়ে কমিশনের সামনে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
Leave a Reply