তৌহিদ আক্তার পান্না, ঈশ্বরদী: ঈদ সমাগত। কর্মজীবী নারী-পুরুষদের বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ঈশ্বরদীতে তাই জমে উঠেছে ঈদবাজার। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সি নারী-পুরুষের ভিড় এখন ঈশ্বরদীর ছোট বড় প্রায় বিশটি বিপণি কেন্দ্র ও শপিংমল গুলোতে।
রোজার শুরুতে মার্কেটগুলোয় দেখা গেছে মধ্যবিত্ত,রাশিয়ান নারী পুরুষ ও অপেক্ষাকৃত বিত্তবানদের কেনাকাটা। কিন্তু এখন সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে রাশিয়ান নাগরিকরাও মার্কেটমুখী। ফলে বিপণি কেন্দ্র ও শপিংমল এলাকাগুলোয় প্রতিদিনই পরিলক্ষিত হচ্ছে ক্রেতার চাপ। ক্রেতাদের মধ্যে ভারতীয় থ্রপিচের চাহিদা বেশী। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার থ্রীপিচসহ সকল প্রকার পোষাক ও প্রসাধনীসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অনেক বেশী বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন।
ঈশ্বরদীর আধুনিক মার্কেট ও শপিং মলগুলোতে ক্রেতার ভীড় বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের বিশেষ সূত্রমতে,এবার ভারতীয় থ্রীপিচ ও শাড়ী ঈশ্বরদীতে শতকরা দশ ভাগ এলসির মাধ্যমে আমদানী করার সুযোগে শতকরা নব্বই ভাগ পণ্যই আমদানী করা হচ্ছে চোরাই পথে। সরকারকে সুভংকরের ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে বলেও সূত্রটি দাবি ।
ঈশ্বরদীতে রয়েছে ঈশ্বরদীবাজার, জাকের সুপার মার্কেট, মনির প্লাজা,গোপাল সুপার মার্কেট,মালিথা মার্কেট,বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কে,পৌর সুপার মার্কেট,মাহফুজ মার্ট, দাশুড়িয়া মালিথা মার্কেট সেকেন্ডহ্যান্ড মার্কেট। এছাড়া পাকশী বাজার,গ্রিণসীটি এলাকার একাধিক শপিংমল,আওতাপাড়া বাজার,আরামবাড়িয়া বাজার,মুলাডুলি ও রাজাপুর বাজার,কালিকাপুর বাজারের দোকান,শপিংমল এলাকা এখন মানুষে ঠাসা। এবার বঙ্গবন্ধু সুপার মার্কেটের দেশ গার্মেন্টসে বাহারি পাঞ্জাবির চাহিদা বেশী। শিল্পী ও সাংবাদিক মৃদুভাষি বাধনের বয়স,ব্যবহার ও সঠিক দামের কারণে দেশ গার্মেন্টেসে বাহাড়ি রকমের পাঞ্জাবি বেশী বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া অন্যান্য শপিং মল ও বিপনীবিতান গুলোয় ক্রেতার ভিড় আর বাইরে সড়কে অতিরিক্ত যানবাহনে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। মার্কেট কেন্দ্রিক ভিড়ের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচন্ড যানজট।এতে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে এ কষ্ট বছরে এক বা দুইবার। এই কষ্টটুকুর মধ্যে মানুষ উপভোগ করছে আনন্দও। পছন্দের পোশাক পেতে ছোটাছুটি চলছে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে। ইপিজেড মার্কেটও পিছিয়ে নেই। এখানে নারী শ্রমিকদের চাপ বেশী। প্রতিটি মার্কেট এখন জমজমাট রূপ ধারণ করেছে।
জুতা ও তৈরি পোশাকের দোকানে ঢুকেই হোঁচট খাচ্ছেন মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। নিম্নআয়ের ক্রেতারাও ছুটছেন পোশাক ও জুতার দোকানে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের চাহিদা মেটাতে হিমশিম অভিভাবকেরা। তারা বলছেন, ঈদ বাজারে তৈরি পোশাক এবং জুতার দাম গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে শোরুমে নতুন পোশাকের পসরা সাজানো বিক্রেতাদের দাবি বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এবারের ঈদে ঈশ্বরদীতে কমপক্ষে এক থেকে সোয়া’শ কোটি টাকারও বেশি ঈদ বাজারে লেনদেন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে মার্কেটগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন নামে পোশাকের পসরা সাজিয়ে ক্রেতাদেরও আকর্ষণ করা এবারের ঈদ বাজারের ব্যবসায়ীদের খদ্দের ধরার আর একটি কৌশল।
এবার বাজারে ক্রেতাদের প্রধান আর্কষণ নারীদের আলিয়াকাট আর নাইরাকাট। এ ছাড়া বাচ্চাদের পোশাক বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও সমান আকর্ষণ লক্ষ্য করা গেছে। জুতার দামও গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দ্বিগুণ। শুধু তাই নয়,জুতার দোকানীরা এবার বিভিন্ন ব্রান্ডের জুতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিম্নামানের জুতা উচ্চ দামে বিক্রি করে ক্রেতাদের সাথে প্রকাশ্যে প্রতারণা চালিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে কয়েকটি ব্রান্ড কোম্পানীর দোকানীর বিরুদ্ধে।
Leave a Reply