স্টাফ রিপোর্টার।। পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার সাঁড়াঘাট ব্লক পাড়া এলাকার বহুল আলোচিত ইসাহাক হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত আসামির দেখানো মতে জব্দ করছে পিবিআই।
গত ৩০/১০/২০ তারিখ রাত্রি অনুমান ২১:০০ ঘটিকায় ভিকটিম মোঃ ইসাহাক এর পিতা বাদী মোঃ দুলাল জানতে পারেন যে তার পুত্র দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঈশ্বরদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তিনি সেখানে উপস্থিত হলে ভিকটিমকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের রেফার্ড করা হয়। পরবর্তীতে গত ৩১/১০/২০ তারিখে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রাত্রে আনুমানিক ২১:৩০ ঘটিকায় ইসাহাক মৃত্যুবরণ করেন।
এ সংক্রান্তে নিহতের পিতা মোঃ দুলাল বাদী হয়ে পাঁচ জন এজাহারনামীয় আসামি ও অজ্ঞাত নামা ৫/৬ জনের নাম উল্লেখ করে ঈশ্বরদী থানায় মামলা রুজু করেন যার মামলা নম্বর ৬ তারিখ ০২/১১/২০ ধারা ৩০২/৩৪ দন্ডবিধি।
মামলার ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি মোঃ রবিউল ইসলাম (৩৬) গতকাল ১৮/৬/২১ তারিখে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ৪ পাবনা এর নিকট ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া এ মামলায় এজাহারনামীয় অপর আসামী মোছাঃ খালেদা গত ১৯/১১/২০ তারিখে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
মামলাটি রুজু হবার পর ঈশ্বরদী থানা পুলিশ এক সপ্তাহ তদন্ত করে। পরবর্তীতে পিবিআই পাবনার স্বউদ্যোগে মামলাটি গ্রহণ করলে জনাব মোঃ গোলাম রাব্বানী উপ পরিদর্শক পিবিআই পাবনার উপর মামলাটির তদন্তভার ন্যাস্ত করা হয়।
ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিকনির্দেশনায় পিবিআই পাবনা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মোঃ ফজলে এলাহী এর সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জনাব মোঃ গোলাম রব্বানী মামলাটি তদন্ত করেন।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে গত ৩০/৬/২০ তারিখে ভিকটিম ইসাহাক সাড়ঘাট ব্লক পাড়াস্থ মোঃ জয়নাল মোল্লার বাসায় জামা কাপড় তৈরীর সুবাদে প্রায় আট বছর যাবত যাওয়া-আসা করতেন। ঘটনার দিন ভিকটিম জয়নাল মোল্লার পুত্রবধূ ও কন্যার জামা সেলাই করে ডেলিভারি দেওয়ার জন্য রাত্রি ২১:০০ ঘটিকায় বাসায় আসে। ভিকটিম জামা ডেলিভারি দেওয়ার পর জয়নাল মোল্লার কন্যা মোছাঃ খালেদার রুমে প্রবেশ করে। সেই সময়ে আসামি মোঃ রবিউল ইসলাম তার বোনের রুমে শব্দ পেয়ে তার ঘর থেকে বের হয়ে জানালা দিয়ে দেখতে পায় যে ভিকটিম তার বোনের সাথে ধস্তাধস্তি করছে।এই দৃশ্য দেখে আসামি মোঃ রবিউল ইসলাম ক্ষিপ্ত হয়ে ইসাহাক কে আক্রমণ করে। এক পর্যায়ে ইসাহাক দৌড়ে পালানোর সময় উক্ত আসামি উত্তেজিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে নিকটে থাকা বাঁশ দিয়ে ভিকটিমের মাথার পেছনে আঘাত করলে ভিকটিম মাটিতে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। সেই সময় আসামি মোঃ রবিউল এর চিৎকার শুনে আসামির পিতা, মাতা, বড় ভাই ঘর থেকে বের হয়।একই সময়ে পাশের বাসা থেকে আসামীর ভগ্নিপতি হাফিজ ভান্ডারী ও বাড়িতে আসে। এরপর ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখান থেকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। ভিকটিম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১/১০/২০ তারিখ রাত্রী অনুমান ২১:৩০ ঘটিকায় মৃত্যুবরণ করে।
এ বিষয়ে পিবিআই পাবনার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ ফজলে এলাহী বলেন একজন আসামীকে ঘটনার পর পর গ্রেপ্তার করা হয় এবং অপর চারজন এজাহারনামীয় আসামি পুলিশি তৎপরতায় গত ১৪/৬/২১ তারিখে বিজ্ঞ আদালতে আত্মসমর্পণ করলেও তাদের মধ্যে মূল আসামী মোঃ রবিউল ইসলাম গতকাল দুইদিনের রিমান্ড শেষে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন এবং ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট আসামিদের নাম প্রকাশ করেন।:
Leave a Reply