স্টাফ রিপোর্টার ।। ঈশ্বরদী থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দীন ও এসআই আব্দুল হালিমের অপসারণ এবং চা দোকানদার আব্দুল মাজেদ কালিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রত্যন্তঞ্চল ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়ার সীমান্তবর্তী সারুটিয়া বাজারে এসব কর্মসুচি পালন করা হয়। চা দোকানদার আব্দুল মাজেদ কালিয়াকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানিয়ে গ্রেফতারসহ ঈশ্বরদী থানা পুলিশের নানা অপকর্মের প্রতিবাদে সারুরিটয়া বাজার সমিতি ও সর্বস্তরের এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সারুটিয়া বাজার সমিতি ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আয়োজিত এসব কর্মসূচীতে বক্তব্য দেন, বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী, পল্লী চিকিৎসক দুলাল মিয়া, ফিড ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম, স্থানীয় আওয়ামীলীগ সভাপতি আকবর আলী বিশ্বাস, মানবাধিকার কর্মী মিজানুর রহমান বুটিয়া, সারুটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের সহ অন্যরা। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গত ৩০ নভেম্বর এলাকার সবচেয়ে ভালো মানুষ বলে পরিচিত চা দোকানদার আব্দুল মাজেদ কালিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তাদের সোর্স শরিফুল ও শহিদুলের মাধ্যমে ৫৩ পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট দিয়ে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এর আগেও ওই এসআই আব্দুল হালিমসহ আরও একজন এসআই ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তাদের নির্দিষ্ট সোর্সের মাধ্যমে এই কালিয়াকে একাধিক মামলা দিয়ে নাজেহাল করা হয়। বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, চা দোকানদার আব্দুল মাজেদ কালিয়া নিজে কোন প্রকার ধুমপান করেন না। তারমত ভাল মানুষ এলাকায় খুব কমই আছে। অথচ তাকে পুলিশের সোর্স শরিফুল ও শহিদুল এর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পুলিশ অফিসাররা তার দোকানে ইয়াবা রেখে তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে সম্মান হানী ঘটানোসহ পরিবারকে ক্ষতি করা হয়েছে।
বক্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, আব্দুল মাজেদ কালিয়াকে গ্রেফতারের পর ঈশ্বরদী থানার ওসি সেখ নাসির উদ্দীনকে বিষয়টি জানালেও তিনি কোন গুরুত্ব দেননি বা পদক্ষেপ নেননি। বক্তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, শুধু চা দোকানদার কালিয়া নই, ঈশ্বরদী থানার মাদক সংক্রান্ত মামলা গুলোর সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই অন্ততঃ শতকরা আশিভাগ মামলার আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলেও বক্তারা জোরগলায় মন্তব্য করেন। পুলিশের সোর্স শরীফ ও শহিদুল এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলেও তারা অভিযোগ করেন। বক্তারা আরও বলেন, দেশ মাদকমুক্ত হোক এটা আমরা চাই, কিন্তু ভালো মানুষকে মাদক নির্মুলের নামে হয়রানি করা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের এইসব অপকর্মের বিষয়গুলো মৌখিক ভাবে ঈশ্বরদী থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দিনকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি এমনকি আব্দুল মাজেদ কালিয়া মাদক ব্যবসায়ি কি না তা এলাকায় তদন্ত না করেই তাকে ইয়াবা দিয়ে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বক্তারা এহেন কর্মকান্ডের জন্য ওসি শেখ নাসির উদ্দিন ও এসআই হালিমের অপসারণ দাবী করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে ঈশ্বরদী থানার ওসি শেখ নাসির উদ্দিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে কেউ এই বিষয় নিয়ে কোন অভিযোগ দেয়নি বা কোন বিষয় মুখেও বলেননি। তাই বিষয়টি নিয়ে তদন্তের কারণ দেখিনা। এ বিষয়ে এস আই হালিম বলেন, চা দোকানদার আব্দুল মাজেদ কালিয়ার কাছে ইয়াবা পাওয়া গেছে। সে জন্য তাকে গ্রেফতার করে চালান করা হয়েছে। তাই অভিযোগকারীদের অভিযোগ সঠিক নয়।
Leave a Reply