বিনোদন প্রতিবেদক : বলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী তিনি। ৪০ বছর বয়সী এই গায়িকার ঝুলিতে রয়েছে ৩টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড, ২টি স্টার স্ক্রিন অ্যাওয়ার্ড, ২টি আইফা অ্যাওয়ার্ড এবং ১টি জি সিনে অ্যাওয়ার্ডসহ একাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার। তিনি উদিত নারায়ণ, কুমার সানু, সোনু নিগম, শানসহ আরও অনেক কিংবদন্তি গায়কের সঙ্গে গান করেছেন। ক্যারিয়ারে ২০০০ টিরও বেশি গান গাওয়ার রেকর্ড রয়েছে এই গায়িকার।
বর্তমানে সংগীত জগতে তার বিশ্বজোড়া খ্যাতি হলেও নিজের একটি সিদ্ধান্ত তার জীবন এবং পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছিল! এই গায়িকার নাম সুনিধি চৌহান। বলিউডে বরাবরই ভিন্ন ধাচের গানের জন্য তিনি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সংগীত জগতে নিজের জন্য একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করেছেন সুনিধি।একাধিক সুপারহিট গান রয়েছেন তার গানের ঝুলিতে। কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবন যেনো এক সিনেমার গল্প! সুনিধি চৌহান তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন দূরদর্শনে সম্প্রচারিত রিয়েলিটি গান শো ‘মেরি আওয়াজ সুনো’ দিয়ে। ১৯৯৬ সালে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার শিরোপা জিতেছিলেন সুনিধি। এর পরে তিনি ‘লিটল ওয়ান্ডারস ট্রুপ’ এর প্রধান গায়িকাও হন।
জানা যায়, মূলত এই শো দিয়ে সুনিধি রাতারাতি সেনসেশন হয়ে ওঠেন। রিয়েলিটি গানের আসর জেতার পর প্রথম হিন্দি চলচ্চিত্রে গান গেয়েছিলেন সুনিধি। ১৯৯৬ সালে প্রথম ‘শাস্ত্র’ চলচ্চিত্রের বিখ্যাত গান ‘লাড়কি দিওয়ানি লাড়কা দিওয়ানা’ গেয়েছিলেন। যেখানে তিনি সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছিলেন কিংবদন্তি উদিত নারায়ণকে। কিন্তু তার আসল সাফল্য আসে ১৯৯৯ সালের ‘মাস্ত’ ছবির ‘রুকি রুকি সি জিন্দেগি’ গান থেকে।
এই গানটি সেই সময়ে ব্যাপক হিট হওয়ার সুবাদে সুনিধি বলিউডের বিখ্যাত গায়িকাদের তালিকায় যুক্ত হন। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে আসার পর সুনিধি শুধুমাত্র হিন্দিতেই নয়, মারাঠি, কন্নড়, তেলেগু, তামিল, পাঞ্জাবি, অসমীয়া, নেপালি এবং উর্দু ভাষায়ও অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি একাধিক পুরস্কারও জিতেছেন গায়িকা। বর্তমানে চলচ্চিত্রে কম গান গাইলেও স্টেজ শো করতে তিনি বেশ ব্যস্ত ও পারদর্শী শিল্পী। বলিউডে এমন একজন বিখ্যাত গায়িকার ব্যক্তিগত জীবন শুনলে শিউরে উঠবেন।
সুনিধির প্রথম বিয়ে হয়েছিল কোরিওগ্রাফার, প্রযোজক ও পরিচালক অভিনেতা ববি খানের সঙ্গে। ববি খান কোরিওগ্রাফার ও পরিচালক আহমেদ খানের ভাই।২০০২ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে অভিনেতা ববি খানকে বিয়ে করেন সুনিধি। পরিবারের অমতে এই বিয়ে করার পর মাত্র এক বছরের মধ্যে তাদের বিয়ে ভেঙে যায়।
একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, সুনিধি তার পরিবারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ববি খানকে বিয়ে করেছিলেন। সে সময় সুনিধির বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর আর ববি খান তার থেকে ১৪ বছরের বড়। এই বিয়েতে সুনিধির বাবা – মা খুব ক্ষুব্ধ হন এবং তারা তাদের মেয়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। ২০০৩ সালেই তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে বিবাহবিচ্ছেদের নরকযন্ত্রণা সহ্য করার পর পুরোপুরি নিজের কেরিয়ারে ফোকাস করেন এবং তারপরই সংগীত শিল্পে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর সুনিধি আবারও তার বাবা – মায়ের সমর্থন পেয়েছিলেন এবং তাকে আবারও কাছে টেনেছিল পরিবার।
সুনিধি এক সাক্ষাৎকারে তার প্রথম বিয়ে ভেঙে যাওয়া এবং তার বাবা – মায়ের অসন্তোষ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। তিনি জানান, সেই সময় ববি খানকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত জীবনের সবচেয়ে বড় ভুলের মধ্যে একটি, যা তার পরিবার ও ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছিল। ববি খানের সাথে বিবাহ বিচ্ছেদের পর সংগীত সুরকার হিতেশ সুনিধির সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সুনিধি। ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল গোয়ায় বিয়ে হয় তাদের। সুনিধি এবং হিতেশও ছোটবেলার বন্ধু। বর্তমানে তাদের একটি ছেলেও রয়েছে।
Leave a Reply