আন্তর্জাতিক ডেক্স।। গত নভেম্বর মাসে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ ভাঙা ও লাইসেন্সবিহীন ওয়াকিটকি ব্যাবহার করার দায়ে গত সোমবার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ৭৫ বছর বয়সী গনতন্ত্র পন্হী নেত্রী আং সান সু চি।
প্রথম মামলার বিচার জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত চলতে পারে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
সু চির বিরুদ্ধে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ, সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ ও ইয়াংগনের সাবেক মুখমন্ত্রীর কাছে থেকে ছয় লাখ ডলার ও ১১ দশমিক চার কেজি সোনা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও আছে।
পরবর্তী মামলায় দুর্নীতি এবং সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গের অভিযোগে সু চির বিচার করা হতে পারে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সু চির বিচারের নিন্দা করে বলেছে, ভবিষ্যতে তার নির্বাচনে লড়া বন্ধ করার জন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে সু চির বিরুদ্ধে আরেকটি মামলায় বিচার শুরু হবে আগামী ১৫ জুনে। এতে দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১৪ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নবেল বিজয়ী সু চি কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবীরা। তার প্রধান আইনজীবি খিন ময়ুং জ সর্বশেষ ওই দুর্নীতির অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট থেকে জানা গেছে, সোমবার গণতন্ত্রপন্থি প্রতিবাদকারীরা দেশটির প্রধান শহর ইয়াংগনের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেছে, তাদের অনেকে ‘বিপ্লবী যুদ্ধ, আমরা অংশ নিচ্ছি’ বলে শ্লোগান দেয়।
কিছু আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, তারা সোমবার চে গুয়েভারার জন্মদিনে ধারাবাহিক ধর্মঘট ও প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করেছে। লাতিন আমেরিকান বিপ্লবী চে তার মৃত্যুর পর বিপ্লবের আন্তর্জাতিক প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
সমগ্র মিয়ানমারে সহিংসতা তীব্র হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করে শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল বাশেলেত সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্র ব্যবহারেরও নিন্দা করেছেন।
মিয়ানমারে সামরিক সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাশেলেতের এ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে। এবং একে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিহিত করেছে।
১ লা ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখল করা ও সু চি সহ তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করার পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে।
তারপর থেকে দেশটির বিভিন্ন স্হানে প্রায় প্রতিদিনই সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভ চলছে এবং সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে জাতিগত সংখ্যালঘু গেরিলা বাহিনী ও মিলিশিয়াদের লড়াই অব্যাহত আছে।
Leave a Reply