স্টাফ রিপোর্টার॥ ঈশ্বরদী কলেজ রোডের মশুড়িয়া পাড়ার গৃহবধু মুক্তি খাতুন রিতা হত্যার মূল রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। হত্যাকান্ডের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ পরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ ও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি রেকর্ড করলে হত্যাকান্ডের মূল রহস্য বেরিয়ে আসে।
টাকা নিয়ে চাকরী না দেওয়ার শর্ত ভঙ্গ করার অপরাধে গত ৩০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে মুক্তি খাতুন রিতাকে তার নিজ বাড়িতে ঢুকে গলা কেটে হত্যা করে দূর্বৃত্যরা।
হত্যাকান্ডের পর স্বল্প সময়ে আসামি গ্রেফতার ও হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করতে পারায় সচেতন মহল ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সোমবার ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, ঈশ্বরদী কলেজ রোডের মশুড়িয়া পাড়ার গৃহবধু মুক্তি খাতুন রিতা দীর্ঘদিন ধরে রুপপুর পরমাণু প্রকল্পের বিভিন্ন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন পদে বেকারদের যুবকদের চাকরী পাইয়ে দিতেন। পরমাণু প্রকল্পের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানে অফিসার পদে কর্মরত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও বাংলা পাওয়ার এ কর্মরত স্বামী বায়েজিদ সরওয়ারের মাধ্যমে মুক্তি খাতুন রিতা চাকরী দিতেন বলে জানা গেছে। এজন্য রিতার বাড়িতে প্রায়ই বেকার যুবকদের আনোগোনা ছিল। এ অবস্থায় সম্প্রতি নাটোরের বড়ইগ্রাম উপজেলার চরগোবিন্দপুর গ্রামের মাহাবুল সরকারের ছেলে শরীফ সরকার (২১), একই গ্রামের কামাল সরদারের ছেলে হেলাল (১৭) ও সাদেক সরকারের ছেলে সাব্বির সরকার (২৭) এর নিকট থেকে পরমাণু প্রকল্পে উচ্চ বেতনে চাকরী দেওয়ার কথা বলে রিতা মোটা অংকের টাকা নিয়ে নানাভাবে প্রতারণা করছিল। তারা টাকা ফেরত চাইলে উল্টো তাদেরই মাস্তান বাহিনীর হুমকি দেওয়া হতো। স্বামী বায়োজিদের নানা বাড়ির এলাকার সাব্বিরকে ৪০/৪৫ হাজার টাকা বেতনের চাকরি দেওয়ার কথা বলে বেশ কিছু টাকা নেয় । এছাড়াও ওই এলাকার আরো কয়েকজনকে চাকরি জোগাড় করে দিবে বলে টাকা নেয়া হয়। কিন্তু সাব্বিরকে উল্লেখিত বেতনের চাকরি না দিয়ে ১২-১৫ হাজার টাকা বেতনে ক্লিনারের চাকরি দেয়া হয়। এতে সাব্বির ক্ষুব্ধ হয়ে টাকা ফেরত বা বেশী বেতনের চাকরী দাবী করে। এসব টাকা লেনদেন নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে তাদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার সাব্বির আরো কয়েকজন চাকরি প্রার্থীকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূ রিতাকে গলা কেটে হত্যা করে। এসময় তারা শ্বাশুড়িকেও শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা চালায়।
এই হত্যাকান্ডটি পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে করা হয়েছে এবং সে কারনেই সেইদিন হত্যার উদ্যেশে সাব্বির ছুরি সাথে করেই এনেছিল।
Leave a Reply