স্টাফ রিপোর্টার॥ ঈশ্বরদীতে করোনায় আক্রান্তের হার দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। করোনা আক্রান্তের প্রতিরোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জনসচেতনা বৃদ্ধিতে মাইকিং, মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানেটাইজার বিতরন শুরু করেছে। ও মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫শে জুন) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে ঈশ্বরদী শহরে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালতের প্রথম দিনেই মাস্ক ব্যবহার না করার অপরাধে ৮ জনকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তাদের নিকট হতে জরিমানা বাবদ এক হাজার ৬০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার এফএ আসমা খান জানান, ঈশ্বরদীতে দিনকে দিন করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের হার বেড়েই চলেছে। যা চরম উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার বিষয়। গত বৃহস্পতি বার ২৪ ঘন্টায় করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় ঈশ্বরদীতে ৬৮ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এই নিয়ে সরকারীভাবে ঈশ্বরদীতে করোনা আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪২৬ জন এবং বে-সরকারীভাবে ১০৩৯জন।
ডাক্তার আসমা খান আরো জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ঈশ্বরদদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে ৩৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের করোনা পজেটিভ এবং বেসরকারীভাবে ১০৯৩ জনের সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষা করে ৫৩ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিএম ইমরুল কায়েস জানান, ঈশ্বরদীতে করোনা পজেটিভের হার খুবই উদ্বেগজনক। ঈশ্বরদী কেপিআই এলাকা। এই কারণে এই মুহুর্তে লক-ডাউনের চিন্তা করা হচ্ছে না। তাই বিকল্প পথ হিসেবে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জন-সচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং করা হচ্ছে। মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের জন্য পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। একই সঙ্গে শহরে জনসচেতনা বৃদ্ধিতে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানেটার বিতরণ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহার না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৮ জনকে জরিমানা করে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যহত রাখা হবে বলেও জানান ইউএনও।
এদিকে পাবনা সিভিল সার্জন ডাক্তার মনিসর চৌধুরী জানান, সারাদেশের মতো পাবনাতেও হঠাৎ করে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে গেছে। মহামারির প্রথম দিকে পাবনাতে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বর্তমানে জেলায় দৈনিক সংক্রমণ ১৬ দশমিক ৪৪ শতাংশে পৌঁছেছে।
সিভিল সার্জন আরো জানান, ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্পের কারণে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ শ্রমিক অবাধে চলাফেরা করার কারণে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাবনা জেলার মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর প্রায় এক তৃতীয়াংশই ঈশ্বরদী উপজেলার। যার প্রভাবে এখন পুরো পাবনা জেলায় সংক্রমিত হয়েছে।
এদিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সুত্র মতে, ঈশ্বরদী করোনা আক্রান্তের পরিমান দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্পে কর্মরত বিদেশীদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এই কারণে বিদেশীদের বসবাসকৃত গ্রিনসিটি গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। রাশিয়ানসহ বিদেশী নাগরিকগণ গাড়ি করে প্রকল্পে কাজের জন্য যাবেন আর গাড়িতে করেই গ্রিনসিটিতে ফিরবেন। এরপর গ্রিন সিটি থেকে আর বের হতে পারবেন না। কারন নতুন করে সংক্রমিত যেনো না হয় সেই জন্য এই লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
Leave a Reply