তৌহিদ আক্তার পান্না,ঈশ্বরদী ।। ভোরের ঘাসে শিশিরের
উপস্থিতি আর সকালের সোনা রোদ জানান দিচ্ছে, কিছুদিন বাদে আগমন ঘটবে শীতের। প্রকৃতিতে সব ঋতুতেই ভিন্নভাবে রাজত্ব চলে । তবে ঋতু হেমন্ত কন্যার প্রতিবারের ন্যায় এবারও ভিন্ন আঙ্গিকে রাজত্ব চলছে। আর এ সময়ের হেমন্ত রাজত্বে শীতের হরেক রকম সবজি চাষে মেতেছেন ঈশ্বরদীর কৃষকেরা। মাঠে মাঠে শীতকালীন সবজি চাষের ধুম পড়েছে। অবশ্য অনেক এলাকার চাষিরা খেতে অগ্রিম সবচি চাষ করেছেন আর্থিক সুবিধা পাওয়ার আশায়। এরই মধ্যে ফুলকপি, গাজর ,মুলা, শিম, বাঁধাকপিসহ বেশ কিছু শীতের সবজি বাজারে উঠেছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার এসব সবজির দাম বেশি। শীতকালীন সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ার কারণ হিসেবে জানাগেছে বেশী দাম পাওয়াই এর ম‚ল কারণ। আবার আবহাওয়াও এবার কৃষকের অনুক‚লে রয়েছে।ঈশ্বরদী কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় স‚ত্রজানায়, এবার ঈশ্বরদীতে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আগাম শীতের সবজি চাষ করা হয়েছে। বাঁধাকপি, পালংশাক, মুলা, শিম, বেগুন, ফুলকপি, টমেটোসহ নানারকম শীতকালীন সবুজ
সবজিতে মাঠের পর মাঠ ভরে উঠেছে যা দেখলৈ মনে
হচ্ছে বিশালাকার সবুজ নগরীতে পরিণত হয়েছে গ্রামাঞ্চল। সুত্রমতে, এবার ঈশ্বরদীতে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর জমিতে শীতের আগাম সবজির চাষ হয়েছে। আবারও কিছু জমিতে নতুন করে শীতকালিন সবজি চাষের প্রক্রিয়া
শুরু করা হয়েছে। প্রতিযোগিতা ম‚লক পরিবেশে বেশি
দাম পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হবার কারণেই ম‚লত চাষিরা
আগাম সবচজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।ল¶ীকুন্ডা,
পাকশী ও মুলাডুলি বাদে ঈশ্বরদীর লিচু উৎপাদনকারী
এলাকার মধ্যে ছলিমপুর, সাহাপুরের বেশিরভাগ এলাকাতেই এখন শোভা পাচ্ছে ফুলকপি, বাঁধাকপি, শিম, গাজর, মুলাসহ হরেক রকমের বাম্পার ফলনের সবজি।
সবজির রাজধানী খ্যাত ঈশ্বরদীর এসব এলাকায় সবচজর
বাম্পার ফলনের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভ‚মিকা রয়েছে
দেশপ্রেমি কৃষকদের। কৃষকরা প্রতিদিন ভোর থেকে
শুরু করেন সবজি খেতের নানা পরিচর্জা। কীটনাশক
ছিটাচ্ছেন, কেউ সেচ দিচ্ছেন। আবার কেউ খেত থেকে সবজি তুলে বিক্রির জন্য বাজারে নিচ্ছেন। অনেকে নতুন করে শীতকালীন সবজির চারা রোপণেও ব্যস্ত। আর এই পরিচর্জায় মূলত ঈশ্বরদীর কৃষকদের নিয়ে যাচ্ছে তাদের লক্ষে উপকৃত হচ্ছে,পরিবার,এলাকা ও দেশ। কৃষকদের কঠোর পরিশ্রমের কারণেই ম‚লত ঈশ্বরদীর মানষের জবিন যাত্রার অনেকাংশের মানোন্নয়ন হয়েছে বলে অনেক কৃষকরাই জোরালো কন্ঠে দাবি করে থাকেন। পাকুড়িয়া, কদিমপাড়া, তিলকপুর, দীঘা, গড়গড়ী, ভাড়ইমারী, খড়েরদাঁইড়, কালামপুর, চরকুড়ুলিয়া, মানিকনগর পশ্চিম, চরকদিমপাড়া, কাঁঠালবাড়িয়া, জগন্নাথপুর, বরমপুর, বেদুনদিয়া, চকনারিচা বাগবাড়ীয়া, দেবীপুর, রামচন্দ্রপুর, রূপপুর ও শেখপাড়া, শ্রীপুর, মাঠে এখন লালশাক, পালংশাক, বাঁধাকপি, টমেটো, মুলা, বেগুন, ফুলকপি, গাজর, শসা, ঢ্যাঁড়স, পুঁইশাক হাত ছানি দিয়ে ডাকছে পাইকারদের। ভাড়ইমারীর কৃষক আলিমুল জানান, সাড়ে তিন লাখ টাকা আয়ের লটার্গেট নিয়ে কপি,গাজর কাকরল ও মূলা চাষ করেছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে । আলিমুলের টার্গেট পূরণ হবে বলে তিনি জানান। বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পুরস্কার প্রাপ্ত কৃষক আব্দুল বারী ওরফে কপি বারী জানান, মুলাতে এবার সকল কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। বাম্পার ফলন হয়েছে বর্ষা ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ কম হওয়া এবং বেশি দাম পাওয়ায় তারা অতিতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। কৃষক মেহেদী জানান, সকল সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকদের লাভ বেশি হচ্ছে। সকল সবজির দাম এবার বেশি।
Leave a Reply