টিএ পান্না, রোভিং করেসপন্ডেন্ট, ঈশ্বরদী: ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ বিধি ও পরিকল্পনা মোতাবেক সহকারী স্টেশন মাস্টার পদসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেওয়ায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন বিভাগে স্বাভাবিক ট্রেন পরিচালনায় হিমশিম খেতে হচ্ছে দায়িত্বশীল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের।
নিয়োগ কাজের সাথে জড়িত দায়িত্বশীল কতিপয় উধর্¦তন কর্মকর্তাদের দেশ প্রেম ও সুদুর প্রসারী পরিকল্পনার অভাব থাকায় বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরও প্রার্থীরা চাকরী ছেড়ে অন্যত্রে লোভনীয় চাকরীতে যোগদান করায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে আর্থিকসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের দেওয়াতথ্য সূত্রে এসব জানা গেছে।
সূত্রমতে,পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী,লালমনিরহাট চট্রগ্রাম অঞ্চল রেলওয়ের ঢাকা ও চট্রগ্রাম বিভাগের যাত্রীসেবার মান ও আর্থিক উন্নয়ন বৃদ্ধি কল্পে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উচ্চ শিক্ষিত বেকার যুবকরা সহকারী স্টেশন মাস্টার,পয়েন্টসম্যান,খালাসি ও ওয়েম্যান পদে আবেদন করে নিয়োগ প্রাপ্ত হন।
নিয়োগ প্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিয়োগ প্রাপ্ত পদের অনুকুলে প্রয়োজনের তুলনায় উচ্চ শিক্ষিত হওয়ায় তারা নিয়োগ ও ট্রেনিং নিয়ে স্বস্ব পদে যোগদানের পর চাকরী ছেড়ে অন্যত্রে লোভনীয় পদের চাকরীতে চলে যাওয়া ও অন্যত্রে চলে যাওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছে এবং হচ্ছে। নিয়োগ দানের সাথে জড়িত উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেশপ্রেম ও যাত্রীসেবার মান ঠিক রাখার মাধ্যমে আর্থিক লাভের বিষয়টি মাথায় না রেখে স্বস্ব পদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার তুলনায় উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার কারণেই রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে এই সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়েছে এবং হচ্ছে।
সূত্রের দাবিমতে, এমনিতেই দীর্ঘদিন থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার জনবল সংকট মাথায় নিয়ে ট্রেনচলাচল অব্যাহত রেখেছে। তার উপর নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে দীর্ঘ জটিলতা পাড়ি দিয়ে নিয়োগ ও ট্রেনিং সম্পন্ন করেও কোন কাজে আসছেনা।
শুধুমাত্র পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহণ দপ্তরের অনুকুলে সাম্প্রতিক সময়ে স্টেশন মাস্টার ঘার্তি থাকায় বন্ধ স্টেশন চালু করন ও চালু স্টেশনে মাস্টারের ঘার্তি পুরণে ১২৫ জন সহকারী স্টেশন মাস্টার পদে নিয়োগ দেওয়ার পর অন্যত্রে লোভনীয় চাকরীতে চলে গেছেন ২৮ জন সহকারী স্টেশন মাস্টার। একই দপ্তরের অনুকুলে পয়েন্টসম্যান পদে ২২১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্য থেকে ৪৮ জন চাকরী ছেড়ে অন্যত্রে চলে গেছেন এবং আরও চলে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। একইভাবে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী/২ দপ্তরের অনুকুলে নিয়োগ প্রাপ্ত ৭৮ জন খালাসি পদের মধ্যে ২৮জন এবং ৮৬ জন ওয়েম্যানের মধ্যে ৩৫ জন চলেগেছেন।
পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী/১, ডিএমইলোকো ও ডিএমই ক্যারেজের খালাসী এবং ডিএসটিই ও ডিইই দপ্তরের অনুকুলে নিয়োগ প্রাপ্ত খালাসীদের ক্ষেত্রেও একই চিত্র দেখা যাচ্ছে। আবার পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের চট্রগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের দপ্তর গুলিতে নিয়োগ প্রাপ্তদের মধ্য থেকেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এসব সমস্য সমাধানে তথ্যদাতা সূত্র ও রেলওয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো,বাংলাদেশ রেলওয়ের ঘার্তিপুরণ,সেবার মান ঠিক রাখা ও বৃদ্ধি করণ এবং আর্থিক ক্ষতি রক্ষায় যে কোন নিয়োগের ক্ষেত্রে পদের অনুকুলে প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগতার চেয়ে অধিক যোগত্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের নিয়োগদানে বিরত থাকাই হবে উত্তম ।
Leave a Reply