তৌহিদ আক্তার পান্নাঈশ্বরদী: রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র,পাকশী লালন শাহ সেতু ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের কারণে ঈশ্বরদীসহ নিকটস্থ কয়েকটি জেলার অনেকাংশে আমুল পরিবর্তন এসেছে। এসব কারণে ঈশ্বরদীর এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় লক্ষাধিক দেশীবিদেশী মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আর লালনশাহ সেতুর কারণে দেশের উত্তর ও দক্ষিনাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতি হওয়ায় মানুষের সহজ যোগাযোগ বৃদ্ধি ও মালামাল পরিবহনের সহজ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে খুব সহজেই এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও ইপিজেডে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হওয়ায় বেকার ও অঅসংখ্য যোগ্য নারী পুরুষের মানুষের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আর্থিক দৈন্যতা দুর হয়েছে এবং হচ্ছে। খুব সহজেই এসব মানুষ চাহিদার তুলনায় অনেক বেশী অর্থ আয় করতে সক্ষম হচ্ছে। একইভাবে এই এলাকায় ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে।
অনেকেই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজের ভাগ্যের আমুল পরিবর্তণ ঘটাতে সক্ষম হচ্ছে। এতে করে এই অঞ্চলের অর্থনীতিও চাঙ্গা হচ্ছে। এ কারনেই গোটা ঈশ্বরদীসহ নিকটস্থ জেলাগুলোর অনেকস্থানে স্বপ্নের অতিত আলিশান আলিশান পাকা বিল্ডিং বাড়ি নির্মাণ করতে সক্ষম হচ্ছে। এসব বিল্ডিংয়ে বাসা ভাড়ার ব্যবসাও জমে উঠেছে। এই ব্যবসার কারণে বহিরাগত অনেক দেশী বিদেশীরাও খুব সহজে এখানে অবস্থান করে ব্যবসা ও চাকুরির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় জমিক্রয় থেকে শুরু করে নতুন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিল্ডিং বাড়ি করতে সক্ষম হচ্ছে।
শুধু মাত্র রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রকে ঘিরে স্থানীয় সাহাপুর ইউনিয়নে সরকারী ভাবে গড়ে উঠেছে ২০ তলা বিশিষ্ট ২২ টি অত্যাধুনিক বহুতল ভবন। যে ভবন গুলোতে শুধু রাশিয়ানদের বসবাস গড়ে উঠেছে। রাশিয়ানদের এই বসবাসস্থলের নিকটস্থ বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে মাহফুজ মাঠ এর মত আধুনিক শপিং মল,বার, অনেকগুলো চাইনিজ রেস্টুরেন্ট,রাশিয়ায়ানদের চাহিদা পুরণে চালু করা হয়েছে হেলদি রেস্টুরেন্ট,বিভিন্ন কফি হাউজ,হোটেল রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন প্রকার পণ্য সামগ্রীর মার্কেট । এমনকি এই এলাকায় হাসপাতাল,ব্যাংক বীমা অফিসও পিছিয়ে নেই। এক কথায় এই এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার মানের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা এতদ অঞ্চলের মানুষের কল্পনাতেও ছিলনা।
অন্যদিকে ইপিজেডের কারণেও স্থানীয়সহ বিভিন্ন জেলার প্রায় ২০ হাজার নারী পুরুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে পরিবহণ ব্যবসাসহ নানা প্রকার ব্যবসা। যেসব ব্যবসা করে এই এলাকার মানুষসহ বিভিন্ন জেলার মানুষের আর্থিক উন্নয়ন হয়েছে ব্যাপক হারে। মাত্র কয় বছর আগেও দেশের উত্তর ও দক্ষিনাঞ্চলের যানবাহণ ও যাত্রীদের ভোগান্তির নাম ছিল পাকশী ফেরিঘাট। এখানে ছিল বাস ট্রাকের ভীড়ের বিরম্বনা।
লালনশাহ সেতু চালু হওয়ায় যাতায়াত ও ব্যবসা বাণিজ্যে পরিবর্তনের ছোয়া লাগে। গড়ে উঠতে থাকে নানা প্রকার শিল্প কলকারখানা এবং আধুনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে করে নতুন প্রজন্মও তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়ায় স্বাবলম্বী হয়েছে এবং হচ্ছে। এ কারনেই নারীরাও পিছিয়ে নেই। তারাও উদ্যোগতা হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসা চালু করে নিজেদের উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রের সহায়ক শক্তিতে পরিণত হচ্ছে।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাতের নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঈশ্বরদী শহর থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি গ্রামাঞ্চলের রাস্তাঘাটে,শপিংমল,হোটেল,মার্কেটসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দেশী বিদেশীদের পদচারনায় মুখরিত পরিবেশ বিরাজ করে বলে ঈশ্বরদীবাসী আজ গর্বিত।
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র,পাকশী লালন শাহ সেতু ও ঈশ্বরদী ইপিজেডের কারণেই ঈশ্বরদীর প্রতিটি গ্রাম এখন শহরে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠা আধুনিক মানের বিল্ডিং বাড়ি,শপিংমল,মার্কেট ও শিল্প প্রতিষ্ঠাণ এবং উন্নত মানের রাস্তাঘাটের কারণে গোটা ঈশ্বরদীকে মনে হয় বিশে^র যে কোন ইন্নত দেশের কোন এক অঙ্গরাজ্য।
Leave a Reply