পিরোজপুর সংবাদদাতা : নদীর স্বচ্ছ পানিতে একটির পাশে নোঙর করা আরেকটি ট্রলার। আর সেগুলোকে ঘিরে আছে ছোট ছোট আরও ট্রলার আর নৌকা। সবাই ব্যস্ত বড় ট্রলার থেকে ছোট যানগুলোতে তরমুজ বোঝাই করতে। এরকমই দৃশ্য ধরা পড়বে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার বেলুয়া নদীতে ভাসমান বৈঠাকাটা তরমুজের বাজারে।
পুরো মৌসুমজুড়ে সাপ্তাহিক এ হাঁটে চলে তরমুজের বেচাকেনা। দক্ষিণাঞ্চলে তরমুজের রাজধানী খ্যাত এ বাজারের প্রতি হাঁটে গড়ে বিক্রি হয় কোটি টাকার ওপরে তরমুজ।
দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় উৎপন্ন হয় সুমিষ্ট রসালো তরমুজ। আর এ তরমুজের একটি বড় অংশের ক্রেতা পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার পাইকারী ক্রেতারা। স্থানীয় চাষীদের কাছ থেকে তরমুজ ক্রয় করে তারা সেগুলো ট্রলারে করে নিয়ে আসেন নাজিরপুর উপজেলার বেলুয়া নদীতে ভাসমান তরমুজের বাজারে।
সেখান থেকে আরেক শ্রেণির পাইকারী ক্রেতারা সেগুলো ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হাঁট-বাজার এমনকি ঢাকা ও চট্টগ্রাম সহ অন্যান্য শহরে নিয়ে বিক্রি করেন। বাংলা চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বৈশাখের শেষ পর্যন্ত জমজমাট থাকে বৈঠাকাটা ভাসমান বাজারে তরমুজের এ ব্যবসা।
সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার গড়ে ৩০-৩৫ টি ট্রলারে চলে তরমুজের বেচাকেনা। হাঁটের দিন খুব সকালে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাকডাকে সরগরম থাকে সাপ্তাহিক এ হাঁট।তবে তরমুজের ব্যবসায় এ বছর কেউই লাভের মুখ দেখতে পারেন নি বলে দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের। চাষীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে তরমুজ ক্রয়ই এর প্রধান কারণ বলে দাবি তাদের।
প্রায় অর্ধশত বছর ধরে বসা বৈঠাকাটা ভাসমান বাজারের প্রতি হাঁটে ৮০ লক্ষ থেকে দেড় কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হয় বলে জানান এ ইজারাদার।বৈঠাকাটা ভাসমান বাজারে তরমুজের ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে কয়েক শত মানুষের। আর এ বাজারটি স্থানীয় অর্থনীতিতেও রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
Leave a Reply